ভ্যাক্সিনেশন কি?

ভ্যাক্সিনেশন হলো একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে টিকা প্রদান করে একজন ব্যক্তিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেওয়া হয়। টিকাগুলি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে, যা পরবর্তীতে যে কোনো সংক্রমণ বা রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে। এটি ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মারাত্মক সংক্রামক রোগগুলোর প্রাদুর্ভাব কমাতে সহায়তা করে।

ভ্যাক্সিনেশন একটি প্রমাণিত এবং কার্যকর পদ্ধতি, যা মানব জীবনেরজন্য হুমকিস্বরূপ সংক্রামক রোগগুলো নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে অসামান্য ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর ভ্যাক্সিনেশনের মাধ্যমে আনুমানিক ২ থেকে ৩ মিলিয়ন মানুষের জীবন রক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়। বিভিন্ন যাচাইকরণ পদ্ধতি ও সুপরীক্ষিত কৌশল ব্যবহার করে এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়। জনগনের শারীরিকপরিস্থিতি ওচাহিদা অনুসারে টিকা প্রদানের ধরণ ভিন্ন হতে পারে, যা বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারণার মাধ্যমে কার্যকরভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে

ভ্যাক্সিনেশনে ভয়-ভীতি বা দুশ্চিন্তার কিছু নেই, বড় ধরনের পদক্ষেপ ছাড়াই এটি সম্পন্ন করা সম্ভব এবং এতে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় কোন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।

সাধারণত ভ্যাক্সিনেশনের জন্য নির্ধারিত স্থান গুলো হলো-

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়

মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পঃ কঃ কেন্দ্র

কমিউনিটি ক্লিনিক

MFSTC

MCHTI

বেসরকারি সংস্থার ক্লিনিক বা হাসপাতাল

টিকা দেওয়ার জন্য বয়স এবং শর্ত সমূহ

নির্দিষ্ট ভ্যাক্সিনেশনের নির্দিষ্ট বয়স এবং কিছু শর্তাবলি মেনে চলতে হয়। এই সেবা প্রাপ্তির শর্তাবলিগুলো হলো-

নির্দিষ্ট ভ্যাক্সিনেশনের নির্দিষ্ট বয়স -

  • ০-১ বছরের শিশুদের টিকাদান
  • ১৫-১৮ মাস বয়সের শিশুদের হামের টিকা প্রদান
  • গর্ভবতী মাদের ধনুষ্টংকারে টিকা প্রদান
  • ১৫-৪৯ বছর বয়সি সন্তান ধারণক্ষম মহিলাদের টিটি টিকা প্রদান

ভ্যাক্সিনেশনের পূর্বের অনুসরনীয় শর্তাবলি-

  • শিশু, কিশোরী ও মহিলাদের সবগুলো টিকা সময়সূচি অনুযায়ী শেষ করতে হবে;
  • সর্বনিম্ন বিরতির আগে টিকা দিলে তা কার্যকরী হবে না এবং এই ডোজটি বাতিল বলে গন্য হবে;
  • পোলিও, পেন্টালেন্ট, পিসিভি ও টিটি টিকার ডোজের বিরতির কোনো সর্বোচ্চ সীমা নেই। দু’টি ডোজের মধ্যে সময় যদি ১২ মাসের ও বেশি হয় তবুও আবার প্রথম থেকে টিকা দেয়া শুরু করা যাবে না। নূন্যতম বিরতি পর হলেই পরবর্তি ডোজ টিকা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রথম ডোজ দেয়ার ২৮ দিনের পরিবর্তে ২/৩ মাসের পরে শিশু / মহিলা আসলেও তাকে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে;
  • কোনো টিকার ডোজ অনুমান করে বা নিশ্চিত না হয়ে দেয়া যাবে না।

টিকা প্রদানের সময়সূচী

০-১১ মাস এবং ১৫ মাস বয়সের শিশুদের টিকাদান সময়সূচি

রোগের নাম টিকার নাম টিকার ডোজ ডোজের সংখ্যা টিকা শুরু সঠিক সময় টিকাদানের স্থান টিকা শুরু সঠিক সময় টিকা শুরু সঠিক সময়
যক্ষা বিসিজি ০.০৫ এম এল - জন্মের পর থেকে বাম বাহুর উপরের অংশে চামড়ার মধ্যে
ডিফথেরিয়া,
হুপিংকাশি,
ধনুষ্টাংকার,
হিমোফাইলাস,
ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি
পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন ডিপিটি,
হেপাটাইটিস-বি, হিব
০.৫ এম এল ৪ সপ্তাহ ৬ সপ্তাহ উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (১ম-ডান, ২য়-বাম, ৩য়-ডান উরুতে) মাংসপেশী
নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া পিসিভি ভ্যাকসিন ০.৫ এম এল ৪ সপ্তাহ ৬ সপ্তাহ উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (১ম-ডান, ২য়-বাম, ৩য়-ডান উরুতে) মাংসপেশী
পোলিও মাইলাইটিস ওপিভি ২ ফোঁটা ৪* ৪ সপ্তাহ ৬ সপ্তাহ মুখে মুখে
হাম ও রুবেলা এমআর টিকা ০.৫ এম এল - ৬ সপ্তাহ মুখে মুখে
হাম হামের টিকা ০.৫ এম এল - ৬ সপ্তাহ মুখে মুখে